রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লক্ষ্যে সদর উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। এ সময়ে নির্দেশনা অমান্য করেন প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী এবং জনসাধারণ। নির্দিষ্ট সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান, কৃষিপণ্যের দোকান ও ফার্মেসী খোলা রাখা ব্যতীত অন্যান্য সকল দোকানপাট পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা থাকলে অনেকই তা মানছেন না। ফলে উদ্বিগ্ন রয়েছেন সচেতন মহল।
বিশ্বব্যাপী চলমান করোনার মহামারীতে বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঝালকাঠিতে এপর্যন্ত এক ইউপি সদস্যসহ ৪জন লোক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আতংকে রয়েছে পুরো জেলাবাসী। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৬ এপ্রিল থেকে সদর উপজেলাকে অবরুদ্ধ (লকডাউন) ঘোষণা করা হয়। মানুষকে ঘরে রাখতেই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। লকডাউনের আওতায় জরুরী পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, কৃষি পণ্য, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ব্যতীত সকল ধরণের গণপরিবহন ও জনসমাগম বন্ধ থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ও কৃষিপণ্যের দোকান খোলা রাখতে, বিকেল ৫টার পর শুধুমাত্র ঔষধের দোকান (ফার্মেসী) ব্যতীত সকল দোকানপাট বন্ধ রাখতে এবং জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই নির্দেশনা যাতে কেউ অমান্য না করেন সেজন্য সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ।
কিন্তু আদেশ অমান্য করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কিছু ব্যবসায়ী এবং জনসাধারণ লুকোচুরি খেলা করে যাচ্ছেন। তারা কৌশল অবলম্বন করে দোকানে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। জানা গেছে, উপজেলা সদরের প্রত্যন্ত এলাকার বাজারগুলোতে প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাপড়, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, ঢেউটিন, রড-সিমেন্ট, লাইব্রেরী, ষ্টেশনারী, স্যানেটারী, ফাস্টফুড ও মিষ্টির দোকান এবং সেলুন কৌশলে দোকানের সাটার অল্প খোলা রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই তারা দোকানের সাটার বন্ধ করে একটু দূরে গিয়ে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ দোকানের ভিতরেও অবস্থান নিতে দেখা যায়। প্রশাসনের কর্মকর্তারা চলে গেলে তারা আবারো নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শুরু করেন ব্যবসা। ক্রেতারাও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাহারা দিয়ে কৌশলী হয়ে কেনাকাটা করছে। প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের এমন লুকোচুরি খেলায় উদ্বিগ্ন রয়েছেন সচেতনমহল। দেশ ও দেশের সকল মানুষের স্বার্থেই মহামারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ও প্রশাসনের আদেশ মেনে চলা খুবই জরুরী এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে, প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় শনিবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের একটি টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২৯ জনকে ২৯ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করেন।
Leave a Reply